বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে বশেমুরবিপ্রবিপি উপাচার্যের শ্রদ্ধা
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর (বশেমুরবিপ্রবিপি)-এর নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন। উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন বুধবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। পরে জাতির জনকের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, সহসভাপতি অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান, জবি নীলদলের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরিমল বালা, অধ্যাপক ড. নাফিস উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ড. মো. সেলিম, অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাদের, অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষক এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপাচার্য ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, আমি এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ছিলাম। সেখানে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে খুব রোমাঞ্চিত অনুভব করছি। আমি বিশ্বের প্রায় ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণ করেছি। এছাড়া পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পড়াশোনা করেছি। সেখানে আমার বেশ কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমিও একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতাম। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবার আমি আমার স্বপ্ন, আমার কল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে চাই। জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের হাতে গড়ে তুলতে চাই। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে হওয়ায় আমি আরও বেশি আনন্দিত। কারণ, বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ হতো না। এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ও হতো না। তাই বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজ হাতে গড়ার দায়িত্ব পাওয়ায় আমি অনেক বেশি আনন্দিত, উদ্বেলিত ও কৃতজ্ঞ। অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন পিরোজপুরের সন্তান। নিজ জন্মভূমিতে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিদ্যাপীঠ হিসেবে গড়ে তুলতে চান বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, আমি এই পিরোজপুরের আলো-বাতাসে বেড়ে উঠেছি। পিরোজপুরের প্রতি স্বাভাবিকভাবেই আমার আলাদা একটা টান রয়েছে। সেই পিরোজপুরের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমাকে দায়িত্ব দেওয়ায় আমি অনেক বেশি সম্মানিত। এই মাটির প্রতি আমার যে ঋণ তা পরিশোধের একটি সুযোগ পেয়েছি। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, বঙ্গবন্ধুর নামে পিরোজপুরে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি আশা করবো, সকলে তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাকে সহযোগিতা করবে। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ, পিরোজপুর অতিমাত্রায় অবহেলিত একটি জনপদ। এই অঞ্চলে জাতির পিতা ও তার পরিবারের কোনো সদস্যের নামে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সেখানে বঙ্গবন্ধুর নামে আমাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর পিরোজপুর অঞ্চলের মানুষ বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পেয়েছে। এতে পিরোজপুরসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলা ও উপজেলার শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে। এতদিন আর্থিক সংকটের কারণে পিরোজপুরের অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন থেকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেলার সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা অনায়াসে উচ্চশিক্ষার সুযোগ লাভ করবে। এর আগে গত রোববার পিরোজপুরে জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীনকে পরবর্তী চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। উপাচার্য হিসেবে যোগদানের তারিখ থেকে এ মেয়াদ কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের কাছে যোগদানপত্র জমা দিয়ে উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।